হতাশায় শয়তান থেকে বাচার ইসলামিক উপায়
হতাশায় শয়তানের প্রতারনা
আমি আপনাদেরকে শয়তানের একটা চালাকির কথা বলছি । শুনুনঃ
মনে
করুন আপনার অফিসে যেতে দেরি হয়েছে
। এবং দেরি করার
জন্য আপনার বস রাগ হয়ে
আছেন। অফিসে আরো
অনেক মানুষ আছে । আপনি
এরকম সময় কি করেন?
আপনি সকলের নজর এড়িয়ে নিজের
টেবিলে গিয়ে বসেন । আপনি
তখন বসের সাথে দেখা
করতে চান না।
অথবা
মনে করুন একটা বাজে
রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আপনি বাড়ি ফিরলেন।
যখন
আপনি ক্লাস সিক্স বা সেভেনে খারাপ
রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসেন তখন আপনি
চুপিসারে ঘরে ঢুকবেন। কোনো আসসালামু আলাইকুম
নেই। কোনো
কিছু নেই । চুপিসারে
ঢুকে আপনি ঘুমের ভান
করে পড়ে রইলেন। মা
যদি জিজ্ঞেস করে আজকে স্কুলে
কি হলো? আপনি তখন
বলবেন তেমন কিছু না
।
আপনি
যখন কাউকে হতাশ করেন তখন
তার থেকে দূরে দূরে
থাকেন । এটাই স্বাভাবিক
। এই ক্ষেত্রে যখন
আমরা অশ্লীল কাজ করি, নিজেদের
উপর জুলুম করি । তখন
আমরা কাকে হতাশ করি?
আল্লাহকে।
আপনি
যখন আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করেন । শয়তান
তখন এর সুযোগ নেয়
। আপনার কাছে এসে সে
বলে তুমি এখন আবার
সালাক পড়তে যাবে? ভন্ড । তুমি
এসব অশ্লীল কাজ করে এসেছো
। এখন আবার একটা
ক্লাস করতে যাবে ? এখন
তুমি ইবাদত করতে যাবে? তুমি
তো দুমুখো মানুষ । তখন সে
বলে হ্যাঁ আমি তো দুমুখো
মানুষ । আমার সালা
পড়া উচিৎ হবে না
। শয়তান আপনার গুনাহের সুযোগ নিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে আপনাকে
আরো দূরে সরিয়ে রাখে
। আপনি তখন আল্লাহর
সামনে দাঁড়াতে বিব্রত বোধ করেন।
আরো দেখতে পারেনঃ
কিন্তু
একজন সত্যিকারের মুমিন ব্যাক্তি যখন ভুল কিছু
করে তৎক্ষণাৎ সে কি করে?
সে আল্লাহকে স্মরণ করে । তারপর
তাঁরা আল্লার কাছে ক্ষমা চেয়ে
নেয় । এখানে জুলুম
শব্দটা দিয়ে পাপ বোঝানো হচ্ছে
। এখানে মূলত বোঝানো হয়
এমন একটা পাপ যার
কারণে আপনি অসম্মানিত বোধ
করেন । এমন কোনো
কাজ যার কারণে আপনি
লজ্জিত, বিব্রত । আর তারা
আল্লার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করে তাদের কৃত লজ্জাজনক কাজ
এর জন্য।
আল্লা
ছাড়া আর কে গুনাহ
ক্ষমা করতে পারেন? আপনি
আর কার কাছে যাবেন?
কোথায় যাবেন? আল্লাহ ছাড়া আর কে জানে
আপনি আর আমি কি
কি ভুল করেছি? আমাদের
গুনাহের খাতায় বহু জিনিস আছে।
যা
আল্লাহ প্রকাশ করেনি। শুধু
আল্লাহই সে সব জানেন।
সেসবের
জন্য আল্লার কাছে আমাদের ক্ষমা
চাইতে হবে । জান্নাতে
যারা যাবে তাদের বর্ণনায়
যেসব বৈশিষ্ট্য এসেছে তার মাঝে এটাই
প্রধান বৈশিষ্ট্য । তাদের জন্য
প্রতিদান হলো তাদের পালন
কর্তার পক্ষ থেকে ক্ষমা
এবং জান্নাত।
এখানে
যে শেষ কথাটি আপনাদের
আমি বলবো, আমার ফ্যামিলির সাথে
একবার শপিং মলে গিয়েছিলাম
। সেখানে এক মা তার
ছেলেকে ভীষণ বোকা দিচ্ছিলেন
। আর ছেলেটা চিৎকার
করে কাঁদছিল। মা ছেলেকে কোষে
একটা চড়ও বসিয়ে দিলো
। কিন্তু আপনি জানেন বাচ্চাটা
তারপরও কার কাছে গেলো?
এর
পরও বাচ্চাটা মাকেই ধরে রইলো ।
তার মাকে ছাড়ছে না
। চারপাশের সব কিম্ভূত কিমাকার
বিশাল বিশাল অচেনা মানুষ। সে
তাদের কাছে যেতে চায়
না। যদিও
তার মা তার ওপর
রাগ হয়েছে, হতাশ হয়েছে ।
তাকে বকা দিচ্ছে কিন্তু
তার আশ্রয়, সুরক্ষা, সে কার কাছে
পাবে? তার মায়ের কাছেই
। এ দৃশ্য আমাকে
ভাবিয়েছে । সুবাহানাল্লাহ ।
আমি
আপনি যখন
গুনাহ করি, যখন
আমরা আল্লাহকে হতাশ করি , তার
অবাধ্য হই, আমরা
কার কাছে যাবো? আমাদের
আর কোথাও যাওয়ার আছে? আমাদের আর
কোথায় যাবার আছে? তাই আমরা
আল্লাকে অসন্তুষ্ট করলেও, আর
আল্লাহ আমাদের যেমন দেখতে চান
তেমন আমরা হতে না
পারলেও , সত্যিকারের
মুসলমান কখনোই আল্লার উপর আশা হারায়
না। আল্লার
উপর আশা হারানোর অনুমতি
তিনি আমাদের দেননি । সত্যিকারের মুক্তা
কি কখনোই আল্লার ওপর আশা হারায়
না আল্লার উপর আশা হারানোর
অনুমতি তিনি আমাদের দেননি।
এই আচরণ আমাদেরকে রপ্ত
করতে হবে।
ধন্যবাদ।