মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাস | মঙ্গল গ্রহে কি আছে?
মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসঃ
একটি বড় উল্কাপিন্ড, একটি এস্ট্রয়েড, একটি নিউক্লিয়ার বাটনের উপর পুস, যেকোনো কিছুই হতে পারে। চোখের পলক ফেলতে দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যেতে পারে । কিন্তু বন্ধুরা "ইজ দা ডেফিনেশন অফ দুনিয়া" ? এই পৃথিবী কি আমাদের দুনিয়া ? আমরা যদি চাঁদ বা মঙ্গল এ গিয়ে বসবাস করা শুরু করি তাহলে সেটা কি আমাদের দুনিয়া বলা জাবেনা?
বিজ্ঞান লাগাতারভাবে আমাদের মানব জাতিকে সেইসব টেকনোলজি দিয়ে যাচ্ছে যা মানব জাতিকে একটি চরম দুঃসময়ে রক্ষা করতে পারে। আর মানুষের যদি নিজের প্রজাতিকে বাঁচাতে হয় তবে শুধুমাত্র পৃথিবী এবং তার সম্পদকে দেখেশুনে একত্রিত করলে হবে না । সেই সাথে এই পৃথিবী থেকে পালিয়ে যাবার আইডিয়া ও ওপেন করতে হবে। আর এই চিন্তার উপরে ভর করে অগ্রসর হচ্ছেন নাসা ।
মঙ্গল গ্রহে নাসাঃ
আমেরিকার
স্পেস এজেন্সি নাসা মনে করে
তারা আসন্ন ২৫ বছরের মধ্যেই মানুষকে মঙ্গল গ্রহে স্থানান্তর করতে পারবে। এখন পর্যন্ত মানুষের
বসবাসের জন্য মঙ্গল গ্রহের
সবথেকে বড় অসুবিধা হলো
সেখানকার জলবায়ু । যার কারণে মানুষের দৃষ্টিশক্তি পর্যন্ত চলে যেতে পারে
। হাড় এর ওজন কমে
যেতে পারে । আর এজন্যই
ওখানে স্থানান্তর হবার আগেই এসব
সমস্যার সমাধান বের করতে হবে
।
পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে যেতে কত সময় লাগেঃ
নাসার হিসেবে তাদের কাছে এখন যে রকেট রয়েছে, তার মাধ্যমে মঙ্গলগ্রহে পোঁছাতে আমাদের নয় মাস লেগে যাবে । এত লম্বা সময় ধরে জিরো গ্রাভিটি ও মধ্যকর্ষন শক্তির বাইরে থাকার কারনে চোখের রেটিনার শিরার মধ্যে এক বিশেষ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । যার কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে । এখন পর্যন্ত যে টেকনোলজি আমাদের কাছে আছে তার মাধ্যমেই হারানো দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এছাড়াও জিরো গ্রাভিটি কারণে হাড়ের ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ কমে যেতে শুরু করে। যার কারণে হার্ট দুর্বল হয়ে যায়।
মঙ্গল গ্রহের মধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর থেকে পোরাটায় উলটা। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত জানে না যে এই সমস্যাটা কিভাবে সমাধান করবেন । এটার একটাই রাস্তা আছে । যে মঙ্গল গ্রহ পর্যন্ত পৌঁছানোর সময়কে কম করে দিতে হবে । এছাড়াও এরোস্পেস এক্সপার্ট যেমন টেকনোলজির আবিষ্কারের পেছনে লেগে রয়েছে, যার মাধ্যমে কসমিক রেডিয়েশন এবং সোলার প্লেয়ার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
মঙ্গল গ্রহে কি আছেঃ
মঙ্গল
নামক এই লাল গ্রহটিতে
পানির সম্ভাবনার পর, আমেরিকান এজেন্সি নাসা সেখানে মানব
বসতি গড়ে তোলার চেষ্টা
করছে । তাদের চেষ্টা তারা এমনভাবে সেখানে
মানববসতি তৈরি করবেন যাতে
সেখানে বসবাসকৃত মানুষ সম্পূর্ণভাবে সেখানকার পরিবেশ এর উপরে নির্ভর
করে বাঁচতে পারে । পৃথিবী থেকে
অনেক দূরে একটা সম্পূর্ণভাবে
আত্মনির্ভরশীল দুনিয়া হবে । এবং এসব
টেস্ট করার জন্য আপনার
তিনটি স্তরে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে ।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস সেন্টারে পরীক্ষাঃ
মহাশূন্যে পরীক্ষামূলক ভাবে থাকা যাত্রীদের
জন্য সেখানে খাবার পানি এবং অন্যান্য
প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে । এবং সেগুলো কে পৃথিবী থেকে
তাদের জন্য মহাশূন্যে পাঠানো
হচ্ছে। এখন
পর্যন্ত এখানে যেটাই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে যে মহাশূন্যে কিভাবে
নিজের প্রয়োজন গুলোকে পূরণ করে আত্মনির্ভরশীল
হওয়া যায় ।
সিসলুনাল স্পেসে প্রশিক্ষণঃ
মহাশূন্যের
এই যাত্রীদেরকে সিসলুনাল স্পেসে চাঁদের কক্ষপথ এবং আশেপাশের কক্ষ
পথ গুলো তে প্রশিক্ষণ
দেওয়া হবে । এখানে মানুষদের
মঙ্গল গ্রহে থাকার ক্ষমতা যাচাই করা হবে। মহাশূন্যের এই পরীক্ষা ২০১৮ সালে
প্রস্থাবিত হয়েছিল । এবং সেটা অলরেডি লঞ্চ
হয়ে গিয়েছে । এটার জন্য স্পেস লঞ্চ সিস্টেম
এসএলএস েটস্ট
করার কথা ছিল ।
যা অলরেডি হয়ে গিয়েছে ।
যাতে লম্বা দূরত্ব
পার করার
জন্য যাত্রীদেরকে তৈরি করা হচ্ছে
। জীবন সঞ্চালন প্রক্রিয়া সীমিত জিনিসপত্র দিয়ে জীবন পরিচালনা এবং
জিনিসপত্র রিসাইকেল করে তা বার বার ব্যবহার করা, এসবের কঠোর
প্রচেষ্টা চলছে ।
পৃথিবী থেকে নির্ভরশীলতা পুরোপুরিভাবে শেষ করে দেয়ার সাথে সাথে মহাশূন্যে বসবাসের জন্য যে যন্ত্র আবিষ্কারের চেষ্টা খুবই গুরুত্বের সাথে করা হচ্ছে । সর্বশেষ এটা নিশ্চিত করতে হবে যে মঙ্গলে বসবাসের জন্য পৃথিবী থেকে প্রাপ্ত জিনিসপত্রের উপর নির্ভরশীলতা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করতে হবে । মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথ এবং তার চাঁদে মানুষ পাঠানো হবে। এবং সেখানে তেমন এনভায়রনমেন্ট করতে হবে যাতে সেখানে মানুষ বংশবিস্তার করতে পারে । এটা একটা খুবই বড় ইম্পর্টেন্ট স্টেপ হবে মানুষের জন্য । মঙ্গলের মাটি থেকেই খাদ্য বস্ত্র অক্সিজেন এবং নির্মাণসামগ্রী বানানো এটা খুবই একটা বড় স্টেপ হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য। 20 মিনিটের মধ্যেই পৃথিবীতে ডেটা পাঠানোর জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে । আর এটা থেকে বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয় আর কিছুই হতে পারে না ।
মঙ্গল গ্রহে নাসার গবেষণাঃ
রিসেন্টলি
নাসা কিছু computer-generated ইমেজেস প্রকাশ করেছে। ছবিতে
দেখা যাচ্ছে সেসব ডিজাইনকে। যার
নাসা আমাদের জন্য প্রপোজ করেছে
মঙ্গলে বসবাসের জন্য এরকম ঘর
তৈরীর জন্য । এই সিলিন্ডারের
মত ইমারত যা এখন স্ক্রিনে
দেখছেন এটা মঙ্গল গ্রহে
তৈরি ঘরের মডেল ।
এ আই স্পেস ফ্যাক্টরি
এটা ডিজাইন করেছে । এবং এগুলোর নাম দেয়া হয়েছে
মার্সা। মার্সার
প্রত্যেকটি ঘরে একটি করে
জানালা রয়েছে । সব জানালা গুলোকে
একসাথে মিশিয়ে দিলে আপনার আশেপাশের
360° দেখা যাবে । কঠোর হওয়া
এবং রেডিয়েশন থেকে বাঁচার জন্য
মাথায় এক ধরনের বিশেষ
কেস লাগানো হয়েছে । সেইসাথে পৃথিবী থেকে দূরে বসবাস
করায় একাকীত্ব দূর করার জন্য
এর ভেতরে এমন লাইট লাগানো
হয়েছে , পৃথিবীর আলোর মতোই দেখায়
। এটা শুরু করার আগেই
যদি একটি খুবই উন্নত
মানের টেস্ট করা হয়েছিল দুবাইতে।
মার্স সাইনসিটিঃ
দুবাইতে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার এবং 1.9 মিলিয়ন স্কয়ার ফিট এলাকায় তৈরি করা হচ্ছে মার্স সাইনসিটি । মরুভূমি এলাকায় এখন পর্যন্ত সুর্যের প্রচণ্ড তাপ এবং শুধুমাত্র বালু রয়েছে । এমন একটি পরিবেশ মঙ্গল গ্রহে ও বিরাজ করে । মঙ্গল গ্রহে বসবাস এর পূর্বে দুবাইয়ের এই মার্স তে প্রথমে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে । শুরুতে এখানে তিনটি স্থাপনা তৈরি করা হবে। যার মধ্যে প্রথমটি হবে মার্স সাইন্স সিটিতে বসবাসকারীদের জন্য। দ্বিতীয় টি হবে চাষ বাষ করার জন্য । এবং তৃতীয়টি রিসার্চের জন্য তৈরি করা হবে । হতে পারে দুবাইয়ের এই মার্স সাইনসিটি ওইসব নভোচারীদের কে মঙ্গল গ্রহে বসবাসের জন্য খুবই সহযোগিতা করবে যারা ট্রেনিং নিয়ে মঙ্গলে যাওয়ার জন্য রেডী হচ্ছে।
বন্ধুরা এই সব প্রস্তুতি তো নিজের জায়গাতেই রয়েছে। কিন্তু মানুষ অনেক লম্বা সময় ধরে একটি অন্য গ্রহে বসবাস করার ফলে তা মানব শরীরের উপরে কত ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলবে তা ধারণা করার অন্তত পৃথিবীতে বসে সম্ভব নয় । এখন এটা আমাদের জন্য চিন্তার বিষয় যে ফাস্ট মার্স মিশন মানব ইতিহাসের সব থেকে বড় সফলতা হবে নাকি এই মার্স মিশন মানব ইতিহাসে একটি সুইসাইড মিশন হিসেবে পালন করা হবে। এবং এখানে আপনার কি মনে হয় ??
আরো দেখুন:
আজ থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল গ্রহের কোর ঠান্ডা হতে থাকে। যার ফলাফল হিসাবে এই গ্রহের ম্যাগনেটিক ফিল্ড ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আপনাদের বলে রাখা ভালোঃ যেকোনো গ্রহের ম্যাগনেটিক ফিল্ড এক সুরক্ষা বলয়ের ন্যায় কাজ করে। যা সূর্যের থেকে আসা সোলার উইন্ড এবং রেডিয়েশন থেকে সেই গ্রহকে বাচিয়ে রাখে।
আর সেজন্য মঙ্গলগ্রহের ম্যাগনেটিক ফিল্ড শেষ হওয়ায় এই গ্রহের এটমসফিয়ার ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়। এতে থাকা সকল নদনদী-সমূদ্র ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এক সময় এই মঙ্গলগ্রহ সবুজশ্যামল ছিলো, আর তা এখন শুখনো এবং নির্জন জাগায় পরিনত হয়েছে।
অর্থাৎ মঙ্গলগ্রহের অবস্থা আজ এতোই খারাপ যে, আমরা মানুষ সেখানে বিনা স্পেস স্যুটে ১মিনিটও বাচতে পারব না।
সম্পূর্ন তথ্যটি পড়ুন আমার এই লেখাটিতে 👇👇👇
https://sohobanglait.com/%e0%a6%ae%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%b2-%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%b9%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a7%80%e0%a6%ac%e0%a6%a8/