বারমুডা ট্রায়াঙ্গল | আটলান্টিক মহাসাগরের রহস্য | Bermuda triangle description
দূর সমুদ্রের বুকে পাড়ি দেওয়ার কিছুদিন পরেই একটি জাহাজ হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো হদিস মেলে না জাহাজটির। কি কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল? নাকি সমুদ্রের বুকে লুকিয়ে থাকা কোন এক গোপন শক্তির কবলে পড়েছিল? প্রশান্ত মহাসাগর রয়েছে তেমনই এক রহস্যময় জায়গা যা শয়তানের সাগর নামে পরিচিত।
জাপানিদের মধ্যবর্তী একটি জায়গা ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল হিসেবে পরিচিত আর এর আশেপাশে এলাকাটিকেই বলা হয়ে থাকে ডেভিল/ শয়তানের সাগর। এটি জাপান তাইওয়ান ও ইয়াদ দ্বীপপুঞ্জ কে সংযুক্ত করেছে দশকের পর দশক জুড়ে। এই স্থানটি এক অজানা রহস্যের আধার হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এমন রহস্যময়তার কারণে জায়গাটি সাগরের বুকে একটি অশুভ স্থান হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত।
ছোট ছোট নদী থেকে শুরু করে বিশাল জাহাজ. এমনকি জায়গার উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানগুলো মুহূর্তের মধ্যে উধাও হয়ে যায়। চীনে প্রায় 1000 খ্রিস্টপূর্ব থেকে একটি পৌরাণিক মতবাদ অনুযায়ী এই সাগরের পানির অতল গহীনে লুকিয়ে আছে এক বিশাল ড্রাগণ । সে যখন বাড়িতে চলাফেরা করে তখন সাগরের বুকে বড় বড় ঢেউ ঘূর্ণিপাক সাগরের ঝড় সহ চারিদিকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায়। ড্রাগন তার ক্ষুধা নিবারণের জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের চলাচল রত বিভিন্ন জাহাজ এবং আকাশপথে চলমান কোনো বিমানকে টেনে পানির নিচে নিয়ে যায় এবং তাতে থাকা মানুষকে খেয়ে ফেলে । এ কারণে জায়গাটি ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল নামে পরিচিত হয়ে এসেছে । ১৯৫২ থেকে ৫৪ সাল এই সময়টাতে মোট পাঁচটি সামরিক জাহাজ এই জায়গায় অতিক্রম করার সময় নিখোঁজ হয়ে যায় এবং এতে প্রায় 700 লোক প্রাণ হারান।
মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার আসল উপায় ২০২৩
আবহাওয়াবিদদের কাছ থেকে জানা যায় দুর্ঘটনার সময় গুলোতে আবহাওয়া একদম শান্ত ছিল এবং জাহাজগুলো থেকে কোন ধরনের সাহায্যের আবেদন করা হয় নায়। এছাড়া ১৮ শতকের দিকে লোকমুখে প্রায়ই শোনা যেত অনেকেই এই এলাকায় জাহাজে করে এক রহস্যময়ী নারী কে প্রদক্ষিণ করতে দেখেছেন। এতসব অসভ্য জায়গার ঘটনা স্থলেই জায়গাটিকে একসময় শয়তানের সাগর বলে আখ্যায়িত করা হয় কিছু অদ্ভুত ঘটনা সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর ১৯৫০ সালে জাপান সরকার রহস্যের উদ্ঘাটন এর উদ্দেশ্যে ৩১ জন ক্রু বিশিষ্ট কাইয়ুম ৫ নামক একটি বিশেষ জাহাজ পাঠান । দুর্ভাগ্যবশত এই অনুসন্ধানকারী জাহাজটি নিখোঁজ হয়ে যায় । ঠিক দুবছর পর 60 টন ওজন বিশিষ্ট এক জাপানী জাহাজে কিভাবে গায়েব হয়ে যায় ১৯৯৫ সালের 21 বছরের একজন আমেরিকান লেখক এর প্রকাশিত "দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল মিস্ট্রি শট" বইটিতে ড্রাগন ফলে বিভিন্ন জাহাজ ও বিমান নিখোঁজ এর কারণ উল্লেখ করা হয়।
আরো দেখুনঃ সহজে কানাডা যাওয়ার ও ভিসা পাওয়ার উপায়
বইটিতে বলা হয়েছে এই সমুদ্রের তলদেশে প্রচুর পরিমাণে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা রয়েছে। আর এই কারণে এখানে প্রায় সব নতুন নতুন দ্বীপ জেগে উঠে এবং অনেক দ্বীপ বিলীন হয়ে যায়। 1972 সালের লন্ডনের এক ম্যাগাজিনের প্রকাশ হয়েছিল পৃথিবীতে সর্ব মোট 12 টি স্থান রয়েছে যেখানে তীব্র চৌম্বকীয় আকর্ষণ অনুভূত হয়। আর শয়তানের সাগরে অবস্থিত ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল এর অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণ এর মধ্যে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত মুখ্য কারণ বলে গণ্য করা হলেও, সুনিশ্চিত কারণ এখনো কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ অনেকটা এগিয়ে গেলেও প্রাকৃতিক কিছু রহস্যের কাছে আজও হার মেনে নিতে হয়।
valo